কবিতাঃ-তুমি আসতে যদি
✍️✍️জেসমিন জাহান নিপা
এসো তুমি ফুল বিহনে
অতি সঙ্গোপনে
বৃষ্টি স্নাত রাতে কিংবা
কোন শুভ ক্ষণে।
সেই প্রতিক্ষায় আজ অবধি
পথের বাঁকে নদী
শাড়ির আঁচল উড়ু উড়ু
তুমি আসতে যদি।
তারা জাগে চাঁদের পাশে
তাই স্মরণে আসে
দিয়েছিলে কথা হবে দেখা
আসছে ফাগুন মাসে।
নির্বাক সেদিন এলাম চলে
ভাসি নয়ন জলে
ঝরা ফুলে গাঁথা মালা
শুকায় আঁচল তলে।
কৃষ্ণা তিথির অলস সাঁঝে
অবুঝ হৃদয় মাঝে
চাপা কান্নার সে বেদনা
করুন সুরে বাজে।
এ হারানোর অনুরাগে
এতো ব্যথা লাগে
অবশেষে চলেই যাবে
জানি নিতো আগে।
সেই বিরহে হলাম কবি
হৃদে তোমার ছবি
কত আশা স্বপ্ন ছায়া
স্মৃতিতে অম্লান সবই।
ছড়াঃ-শীত এসেছে
✍️✍️জেসমিন জাহান নিপা
শীত এসেছে শীত এসেছে
কাঁথা কম্বল লই
খোকা খুকু কাঁপছে সবাই
রাত দুপুরে ঐ।
হাড় কাঁপুনি হচ্ছে সদা
শীতের বাড়ি কই?
ধরতে গেলে পাইনা খুঁজে
চুপটি মেরে রই।
ভাপা পিঠা মোয়া মুড়কি
টক মিষ্টিতে দই
কে বলেছে শীতটা পাজি
এমন কিন্তু নই।
শীতের দিনে ভোর বেলাতে
ইলিশ মাছের ঝোল
টাটকা খাবার ভারী মজার
পল্লী মায়ের কোল।
আকাশ পানে উড়ছে ঘেঁষে
সব পাখিদের দল
খালে বিলে পড়ছে ঝাঁকে
বুনো হাঁসের ঢল।
ধোঁয়া ধোঁয়া চাদর ঢাকা
শিশির ভেজায় ভোর
আলসে লাগে ফিকে আলোয়
খুলতে উঠে দোর।
ট্রিওলেট
সরবৃত্তঃ-৪+৪/৪+৪
দূর নীলিমা
✍️✍️জেসমিন জাহান নিপা
দূর নীলিমার নীল মেখেছে নববধূর চপল আঁখি
রঙ তুলিতে সাজ এঁকেছে প্রিয়তমার প্রতিচ্ছবি
সন্ধ্যা এসে দিয়ে গেছে রক্ত ললাট চুম্বন আঁকি
দূর নীলিমার নীল মেখেছে নববধূর চপল আঁখি
মেঘমালারা থমকে দাঁড়ায় নীলিমা যায় কালোয় ঢাকি
শেষ বিকেলের গোধূলি ক্ষণ হয় উদাসী বাউল কবি
দূর নীলিমার নীল মেখেছে নববধূর চপল আঁখি
রঙ তুলিতে সাজ এঁকেছে প্রিয়তমার প্রতিচ্ছবি।
ছড়াঃ শীত এলোরে
✍️✍️জেসমিন জাহান নিপা
শীত এলোরে দেখবি কারা
জলদি আয়রে গায়ে
সোনার টুপুর মাথায় দিয়ে
শীত বসেছে নায়ে।
শীতের সনে খাঁন সাহেবের
বড়ো মেয়ের বিয়ে
কনের সাজে ঝাঁক ঝমকে
সেজেছে খুব টিয়ে।
দুই বাড়িতেই হাসি খুশি
বিয়ের সানাই বাজে
বেনারসী পরছে কনে
ঘোমটা টেনে লাজে।
লাল টুকটুকে সাজ এঁকেছে
মেহেদীতে হাতে
আজ পিঁড়িতে বর কনেরা
জোছনায় ভরা রাতে।
পরলো শীতে শেরোয়ানি
মুখে রুমাল দিয়ে
আজকে যাবে শশুর বাড়ি
নতুন বউকে নিয়ে।
কনের বাবা দাওয়াত করছে
ঢোল পিটিয়ে দেশে
দেন মোহরানায় কষাকষি
আদায় হলো শেষে।
কবিতাঃ -ভাগ্যের চাকা
✍️-জেসমিন জাহান নিপা
মুক্ত মনে উড়বে পাখি
করবে কেন সন্ধি
নির্মমতার কষাঘাতে
খাঁচার ভেতর বন্দি।
ছুটেছে সে আপন রথে
বুকে বিশাল আশা
ঝড় এসেই ভেঙে দিলো
সুপ্ত মনের খাসা।
ভাগ্যের চাকা বড়ই কঠিন
ধসে সে তো ঝড়ে
জিম্মি হয়ে উপড়ে পড়ে
টনক তবেই নড়ে।
বন্দি পাখির ভাসে আঁখি
বিন্দু বিন্দু জলে
সব পাখিরা অট্ট হেঁসে
উড়ছে দলে দলে।
শত চেষ্টা বিফলে যায়
ডানা ঝাপটে মরে
সন্ধানী সে শিকারি যে
আনলো তাকে ধরে।
হতাশ পাখি ভাবছে বসে
পরাধীনতার কষ্ট
সব আয়োজন মিছে হলো
বেদনায় পথ ভ্রষ্ট।