1. info@dainiknetrojolsahitthomagazine.com : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন
  2. info@www.dainiknetrojolsahitthomagazine.com : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন :
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪১ পূর্বাহ্ন

লকডাউন। লেখিকা:কানিজ ফাতেমা তুরমনি

  • প্রকাশিত: রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৪১ বার পড়া হয়েছে

লকডাউন
লেখিকা:কানিজ ফাতেমা তুরমনি

সময়টা ২০২০ সালের মার্চ মাস। বাংলাদেশে তখন করোনা ভাইরাসের উৎপাত শুরু হয়েছে। এই মার্চ মাসেই লকডাউন শুরু হয়েছে। এই লকডাউনের জীবন একটি মিশ্র অনুভূতির সাথে কেটেছে। তুর্কি জীবনেও এমন একটা মিশ্র অনুভূতির গল্প আছে। আসলে তার নাম তুরমনি। তার বন্ধুরা তাকে তুর্কি বলে ডাকে। মেয়েটি মোটা, গায়ের রঙ একটু কালো। ১৫ই মার্চ ভোর ৬ টায় তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। উঠে আগে সে গোসল করল। এরপর, খাবার দাবার খেয়ে স্কুলের ড্রেস পড়ে রেডি হয়ে আছে। সে এখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের স্কুলে আবার কোচিং হয়। কোচিং এ অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হয়। সেদিন সে হেঁটেই স্কুলে যাবে বলে ঠিক করল। স্কুলে যাওয়ার পথে তার এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে গেল। সে পিছন থেকে ডাকছে, আফিয়া দাঁড়া আমার জন্য।

আফিয়া : কিরে তুর্কি নাকি ?
এর মাঝে হঠাৎ করে আফিয়া বলল: তুর তুই কী covid _ 19 এর … কথা জানিস?
তুর : হ্যাঁ, শুনেছি বাবার কাছে। অনেক মারাত্মক নাকি?
আফিয়া : হুম, মারাত্মকতো বটেই । বাংলাদেশে নাকি চলে এসেছে !
তুর : জানি না আমি গতরাতের খবর দেখতে পারিনি।
তবে তুর কথাটায় বেশি গুরুত্ব দিল না। স্কুলে গিয়ে তুর আর আফিয়া বসল সামনের বেঞ্চে। ওই দিন তাড়াতাড়ি কোচিং ছুটি হয়ে গেল। সবাই মজা করছে। সমাবেশের পরেই ক্লাস শুরু হয়ে গেল, প্রথম ক্লাস তুরের মার। উনি আজকে english grammar পড়বেন। কিন্তু হঠাৎ একজন একটু হেসে উঠেছিল। তাই ওকে আগে শিক্ষা দিল। তুর মনে মনে তার মাকে রাক্ষসী রানী কটকটি বলে। তুর আর আফিয়া টিফিনের বিরতি লাইব্রেরিতে কাটায়। সবাই গল্প করছে এমন সময় আফিয়ার বাবা covid _19 এর কথা বললো। তখন তুরের একটু ভয় লাগল। ওইদিন সে বাসায় গিয়ে তার বাবার জন্য অপেক্ষা করছিল। সে তার বাবার কাছে জিজ্ঞেস করতে চায় যে, ছোটদের কী covid _19 হয় কি না? রাত ০৮:৩০ কিংবা ০৮:৩৯ এর দিকে তার বাবা চলে আসেন।তার বাবা রুমে এসে তাকে একটা মাস্ক দেয়। সে তার উত্তর পেয়ে যায়। তখন সে বুঝতে পারল ছোটদেরও ভাইরাস হতে পারে। পরের দিন আর কোচিং হলো না। একজন শিক্ষক এসে বললেন আগামীকাল থেকে পনেরো দিন স্কুল বন্ধ থাকবে। তুর এই বন্ধের মধ্যে কি করবে তা ভাবছে। তখন তার মা এসে বলল; একটু খবরের চ্যানেল দে। সবাই খবর দেখতে ব্যস্ত। দেশে ট্রেনের গতিতে বাড়ছে ভাইরাস। দেশটা যেন কবরস্থানে পরিবর্তন হয়েছে। সারাদেশে লকডাউন পড়েছে।
তুরের মা : আগামী ছয় মাসের মধ্যে আর স্কুল খুলবে বলে মনে হয় না।
এরপর আসল ঈদ। ওরা ৪ কিংবা ৫ দিন আগে দাদাবাড়ি চলে যায়। কিন্তু এইবার ১ দিন আগে যাচ্ছে। তবে এবার ১ মাস থাকলো দাদাবাড়ি। এর কয়েক দিন পর, তুর জানতে পারল তার এক সহপাঠীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ওর বাবা মা ভেবেছিল স্কুল নেই পড়ালেখা নেই। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়, তাই ওকে বিয়ে দিয়ে দিলে একটা বোঝা কমবে। কিন্তু মেয়েটি এখনও পর্যন্ত বিয়ের উপযুক্ত হয়নি। কিন্তু সে কথা কে আর বুঝবে তাদেরকে? নভেম্বর মাস দেশটা একটু উন্নতির দিকে। এই সময়কে তুর আর হাত ছাড়া না করে সে চলে গেল তার নানাবাড়ি। সেখানে অনেক মজা করল সে। হঠাৎই একদিন তার মা তাকে কল করে চলে আসতে বলল। খানিকটা অবাক হয়ে সে বলল কেন ?
মা : এবার যে তোমাকে high school এ পড়তে হবে।
তুর : কি ? আমি এখনও পর্যন্ত ক্লাস ফাইভ পাস করি নাই। তবে কেন আমি অন্য স্কুলে ভর্তি হব?
মা: তুর, listen to me ,.. time and tide wait for none ..
মার কথা শুনে সে চলে আসে। এসে দেখে তার বাবা মা তাকে কিছু না জানিয়ে তাকে নন্দকুমার স্কুলে ভর্তি করে দেন। কিন্তু সে ঢাকায় তার বন্ধুদের সাথে পড়তে চেয়েছিল। তার বাবা মার অনুরোধে সে শিবচরে ভর্তি হল। এই একটি বছর ছিল তাঁর জীবনের অভিশপ্তের বছর। এই অভিশপ্ত বছর তার জীবনে নিয়ে আসে অন্ধকার। এই অন্ধকারের মধ্যেও সে আলোর কণা খুঁজে যাচ্ছে। সেই আলো কাজে লাগিয়ে সে বাকি পথটুকু পার হতে চায়। সমাজের অন্ধকার দূর করতে চায়।

শেয়ার করুন

আরো পড়ুন
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট